Dhaka 9:43 am, Friday, 19 April 2024

কক্সবাজার আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক মনোনয়ন বাণিজ্যে জড়িত : সাংসদ জাফর

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:11:44 am, Saturday, 12 June 2021
  • 503 Time View

 

এনবি নিউজ : কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন বাণিজ্যে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম। তিনি আরও অভিযোগ করেন, পুরো জেলা আওয়ামী লীগ বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। দল পরিচালনা ও পুনর্গঠনে পুরো জেলায় তাঁরা ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। দলের ভেতর তাঁরা বিভাজনের রাজনীতি করছেন। এ কারণে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগকে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে একটি নিকৃষ্ট ও ঘৃণিত কমিটি হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।

এ সময় সাংসদ জাফর অভিযোগ করেন, গত ১০ জুন জেলা আওয়ামী লীগের সভায় তাঁকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক ও দলীয় গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি। তিনি বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে দলকে রক্ষার জন্য দলীয় হাই কমান্ডের কাছে দাবি জানান।

জাফর আলম দাবি করেন, বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানসহ কমিটির অনেকেই মাদকাসক্ত। সন্ধ্যার পর থেকে তাঁরা বেঘোরে থাকেন। সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ সচিবের যোগসাজসে পানি শোধনাগার প্রকল্পে তাঁর কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির কারণে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। চাঁদা না দেওয়ায় অনেক হোটেল জবর দখল করে রেখেছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।

এ সময় চকরিয়া, পেকুয়া, মাতামুহুরী উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাংসদ জাফর আলম স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রতি ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে— মেয়াদোত্তীর্ণ কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে পুনর্গঠন, জনপ্রিয় নেতাদের সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে অব্যাহতি সম্বলিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারপূর্বক ক্ষমা চাইতে হবে, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, পেকুয়া ও মাতামুহুরী উপজেলা ও চকরিয়া পৌরসভাসহ জেলার বিভিন্ন ইউনিটে জেলা আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিকারী সিন্ডিকেট রাজনীতির অবসানকল্পে তাঁদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে, জনপ্রিয় নেতাদের অগঠনতান্ত্রিকভাবে হটিয়ে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্ব সৃষ্টির প্রবণতা বন্ধ করতে হবে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে কেন্দ্রে তালিকা প্রেরণ ও মনোনয়ন দেওয়ার নামে অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে, কক্সবাজার পৌরসভার পানি শোধনাগার প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে দুদকের চলমান তদন্তে মেয়র মুজিবসহ যাদের নাম এসেছে তাদের শাস্তি নিশ্চিতকল্পে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে, দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনে মেয়র মুজিবুর রহমানের দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াসহ নানা অভিযোগ এনে জেলা আওয়ামী লীগ গত বৃহস্পতিবার চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়াসহ দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করতে কেন্দ্রে সুপারিশ করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৩৯ কিলোমিটার এবং পেকুয়া, মাতামুহুরী উপজেলায়ও অবরোধ করেন ক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। পরে সাংসদ জাফরের নির্দেশে নেতাকর্মীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে বাড়ি ফেরেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

কক্সবাজার আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক মনোনয়ন বাণিজ্যে জড়িত : সাংসদ জাফর

Update Time : 04:11:44 am, Saturday, 12 June 2021

 

এনবি নিউজ : কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন বাণিজ্যে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম। তিনি আরও অভিযোগ করেন, পুরো জেলা আওয়ামী লীগ বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। দল পরিচালনা ও পুনর্গঠনে পুরো জেলায় তাঁরা ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। দলের ভেতর তাঁরা বিভাজনের রাজনীতি করছেন। এ কারণে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগকে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে একটি নিকৃষ্ট ও ঘৃণিত কমিটি হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।

এ সময় সাংসদ জাফর অভিযোগ করেন, গত ১০ জুন জেলা আওয়ামী লীগের সভায় তাঁকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক ও দলীয় গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি। তিনি বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে দলকে রক্ষার জন্য দলীয় হাই কমান্ডের কাছে দাবি জানান।

জাফর আলম দাবি করেন, বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানসহ কমিটির অনেকেই মাদকাসক্ত। সন্ধ্যার পর থেকে তাঁরা বেঘোরে থাকেন। সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ সচিবের যোগসাজসে পানি শোধনাগার প্রকল্পে তাঁর কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির কারণে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। চাঁদা না দেওয়ায় অনেক হোটেল জবর দখল করে রেখেছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।

এ সময় চকরিয়া, পেকুয়া, মাতামুহুরী উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাংসদ জাফর আলম স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রতি ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে— মেয়াদোত্তীর্ণ কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে পুনর্গঠন, জনপ্রিয় নেতাদের সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে অব্যাহতি সম্বলিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারপূর্বক ক্ষমা চাইতে হবে, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, পেকুয়া ও মাতামুহুরী উপজেলা ও চকরিয়া পৌরসভাসহ জেলার বিভিন্ন ইউনিটে জেলা আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিকারী সিন্ডিকেট রাজনীতির অবসানকল্পে তাঁদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে, জনপ্রিয় নেতাদের অগঠনতান্ত্রিকভাবে হটিয়ে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্ব সৃষ্টির প্রবণতা বন্ধ করতে হবে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে কেন্দ্রে তালিকা প্রেরণ ও মনোনয়ন দেওয়ার নামে অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে, কক্সবাজার পৌরসভার পানি শোধনাগার প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে দুদকের চলমান তদন্তে মেয়র মুজিবসহ যাদের নাম এসেছে তাদের শাস্তি নিশ্চিতকল্পে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে, দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনে মেয়র মুজিবুর রহমানের দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াসহ নানা অভিযোগ এনে জেলা আওয়ামী লীগ গত বৃহস্পতিবার চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়াসহ দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করতে কেন্দ্রে সুপারিশ করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৩৯ কিলোমিটার এবং পেকুয়া, মাতামুহুরী উপজেলায়ও অবরোধ করেন ক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। পরে সাংসদ জাফরের নির্দেশে নেতাকর্মীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে বাড়ি ফেরেন।