Dhaka 12:21 am, Thursday, 18 April 2024

ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড, ৩৯ জনের লাশ উদ্ধার, দগ্ধ ২ শতাধিক। উদ্ধার চলছে

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:01:46 am, Friday, 24 December 2021
  • 597 Time View

 

এনবি নিউজ : ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি অভিযান-এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আজ সকাল ১১ টা পর্যন্ত ৩৯  জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে সকাল ১০ টার দিকে ৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে ভাসমান অবস্থায়। এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডে দুই শতাধিক মানুষ দগ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। মৃতর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানান, ঢাকা থেকে ছয় শতাধিক যাত্রী নিয়ে বরগুনা যাচ্ছিল এমভি অভিযান নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ। রাতে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুন লেগে ২০০ জনেরও বেশি যাত্রী দগ্ধ হয়। এদের মধ্যে ৭২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হক জানান, ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যাত্রীদের উদ্ধারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন। দগ্ধ যাত্রীদের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

ঝালকাঠির ডিসি মো. জোহর আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পোড়া লঞ্চ থেকে এ পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ৭২ জনকে দগ্ধ অবস্থায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা বলেছেন, বরগুনাগামী ওই লঞ্চে হাজারখানেক যাত্রী ছিলেন। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে লঞ্চে আগুন ধরে যায়। পরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হয়।

প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকা ওই লঞ্চ থেকে প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকে। স্থানীয়রা ভিড় করেন নদী তীরে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও সেখানে যান। ট্রলার নিয়ে লঞ্চের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তারা।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, যেখানে লঞ্চটিতে আগুন লেগেছে, ওই এলাকা ঝালকাঠি লঞ্চঘাট থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। লঞ্চের ইঞ্জিনরুমের অংশটি বেশি পুড়েছে। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা।

ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্যে তাদের কাজ ব্যাহত হয় বলে জানান শফিকুল।

ওই লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী আব্দুর রহিম জানান, রাতে ডেক থেকে তিনি হঠাৎ বিকট শব্দ পান। তারপর লঞ্চের পেছন দিক থেকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখেন। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন পুরো লঞ্চ গ্রাস করে ফেলে। আতঙ্কিত হয়ে তিনি ডেক থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়েন।

দিয়াকুল গ্রামের লোকজন নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছিলেন। তারাই রহিমকে উদ্ধার করে গরম কাপড় দেন। পরে সকালে তাকে ট্রলারে করে ঝলাকটি শহরে নেওয়া হয়।

লঞ্চ মালিক হামজালাল এনবি নিউজকে জানান, তার ৩ ট লঞ্চের মধ্যে এটির ধারন ক্ষমতা ছিল ৯০০ জনের বেশি। লঞ্চটি আড়াই বছর ধরে চলাচল করলেও মাত্র ৩ দিন আগেই ইঞ্জিন পরিবর্তন করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড, ৩৯ জনের লাশ উদ্ধার, দগ্ধ ২ শতাধিক। উদ্ধার চলছে

Update Time : 04:01:46 am, Friday, 24 December 2021

 

এনবি নিউজ : ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি অভিযান-এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আজ সকাল ১১ টা পর্যন্ত ৩৯  জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে সকাল ১০ টার দিকে ৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে ভাসমান অবস্থায়। এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডে দুই শতাধিক মানুষ দগ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। মৃতর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানান, ঢাকা থেকে ছয় শতাধিক যাত্রী নিয়ে বরগুনা যাচ্ছিল এমভি অভিযান নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ। রাতে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুন লেগে ২০০ জনেরও বেশি যাত্রী দগ্ধ হয়। এদের মধ্যে ৭২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হক জানান, ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যাত্রীদের উদ্ধারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন। দগ্ধ যাত্রীদের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

ঝালকাঠির ডিসি মো. জোহর আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পোড়া লঞ্চ থেকে এ পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ৭২ জনকে দগ্ধ অবস্থায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা বলেছেন, বরগুনাগামী ওই লঞ্চে হাজারখানেক যাত্রী ছিলেন। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে লঞ্চে আগুন ধরে যায়। পরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হয়।

প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকা ওই লঞ্চ থেকে প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকে। স্থানীয়রা ভিড় করেন নদী তীরে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও সেখানে যান। ট্রলার নিয়ে লঞ্চের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তারা।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, যেখানে লঞ্চটিতে আগুন লেগেছে, ওই এলাকা ঝালকাঠি লঞ্চঘাট থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। লঞ্চের ইঞ্জিনরুমের অংশটি বেশি পুড়েছে। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা।

ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্যে তাদের কাজ ব্যাহত হয় বলে জানান শফিকুল।

ওই লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী আব্দুর রহিম জানান, রাতে ডেক থেকে তিনি হঠাৎ বিকট শব্দ পান। তারপর লঞ্চের পেছন দিক থেকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখেন। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন পুরো লঞ্চ গ্রাস করে ফেলে। আতঙ্কিত হয়ে তিনি ডেক থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়েন।

দিয়াকুল গ্রামের লোকজন নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছিলেন। তারাই রহিমকে উদ্ধার করে গরম কাপড় দেন। পরে সকালে তাকে ট্রলারে করে ঝলাকটি শহরে নেওয়া হয়।

লঞ্চ মালিক হামজালাল এনবি নিউজকে জানান, তার ৩ ট লঞ্চের মধ্যে এটির ধারন ক্ষমতা ছিল ৯০০ জনের বেশি। লঞ্চটি আড়াই বছর ধরে চলাচল করলেও মাত্র ৩ দিন আগেই ইঞ্জিন পরিবর্তন করা হয়।