ফাইল ফটো
বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে যেন একাই ব্যাট হাতে লড়ে যাচ্ছেন জাকির হাসান। ৫৮, ৭৫, ২৫ – আজকের জাকিরের সর্বশেষ তিন ইনিংস, যেখানে স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৬৯। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান আজ সিলেটের বিপক্ষে ১৩৯ স্ট্রাইক রেটে খেলেছেন ৩৯ রানের ইনিংস। তবে ধারাবাহিকভাবে জাকির রান করে গেলেও আজ তাঁর দল সিলেট হার ঠেকাতে পারেনি।
জাতীয় দলের জার্সিতে নিয়মিত টেস্ট ম্যাচ খেললেও টি-টোয়েন্টিতে তেমন সুযোগ পাননি জাকির। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন, যার মধ্যে একটি ছিল সেই ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এরপর তিনটি ম্যাচ খেলেছেন ২০২৩ এশিয়ান গেমসে। তবে চলতি বিপিএলে জাকিরের আগ্রাসী ব্যাটিং নির্বাচকদের চোখেই রাখতেই হচ্ছে। ৭ ম্যাচে এখন পর্যন্ত ১৪৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯০ রান।
কিন্তু টপ অর্ডারে জাকির আর মিডল অর্ডারে জাকের আলী অনিকের(৩১রান) বাইরে আজ রাজশাহীর দেয়া ১৮৫ রানের লক্ষ্যে নেমে কোনো ধরণের লড়াই করতে পারেনি সিলেট। সানজামুল-মৃত্যুঞ্জয়দের বোলিং তোপে ১৫ বল আগেই মাত্র ১১৯ রানেই গুটিয়ে যায় আরিফুল ইসলামের দল।
সিলেটকে এক তরফা লড়াইয়ে ৬৫ রানের ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে তৃতীয় জয়ের দেখা পেয়েছে বেতন ইস্যুতে দুদিন আগে অনুশীলন বয়কট করা দুর্বার রাজশাহী। যদিও দলের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যায় জানানো হয়েছিল অনুশীলন বয়কট বেতন না পাওয়ার কারণে নয়, তবে গতকালের মধ্যে ক্রিকেটারদের প্রাপ্য অর্থের ২৫ শতাংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে রাজশাহীর মালিকপক্ষকে।
১৮৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ইনিংসের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সিলেট। রাজশাহীর সানজামুল ইসলামের স্পিনে সিলেটের দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও রনি তালুকদার তিন ওভারের ভেতরেই ফিরে যান। দলীয় ১৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে এক প্রকার ছিটকে যায় সিলেট।
তবে পুরো বিপিএলে সিলেট স্টাইকার্সের হয়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা জাকির হাসান আজও দলটিকে আশা দেখিয়েছেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করতে থাকেন জাকির। পাওয়ার প্লে-তে সিলেট আর কোনো উইকেট না হারিয়ে তোলে ৪৬ রান।
মাঝ ওভারে তৃতীয় উইকেটে সঙ্গে থাকা জর্জ মানসির কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা না পাওয়া জাকির একাই রানের গতিতে বাড়ানোর চেষ্টা করেন। ৯ ওভার শেষে মানসি যখন ১৮ বলে ১৮ রান করে আস্কিং রান রেটের গতি বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন, তখন বড় শট খেলতে গিয়ে মার্ক দায়ালের বলে ক্যাচ দিয়ে দশম ওভারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন জাকির। দলীয় ৭১ রানে ফেরার আগে করেছেন জাকির ২৮ বলে ৩৯ রান। কে জানত! জাকিরের সেই ৩৯ রানই হবে সিলেটের সেরা ইনিংস।
বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের আউটের পর যে সিলেট আর প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। একের পর এক নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৭১ রানে ২ উইকেট থেকে মাত্র ১১৯ রান তুলতেই গুটিয়ে যায় আরিফুল ইসলামরা। রাজশাহীর হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন সানজামুল।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে দুর্বার রাজশাহীর সব ব্যাটসম্যানই আজ নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন। দলের প্রথম ৬ জন ব্যাটসম্যানের সবাই দুই অঙ্কের ঘরে রান করেছেন। পাওয়ার প্লের চতুর্থ ওভারে মোহাম্মদ হারিস ১৯ রান করে ফিরে গেলেও এরপর জিসান আলম-এনামুল হক বিজয়রা দলের হাল ধরেছেন।
দশ ওভারের ভেতর দলীয় ৮৮ রানে জিসান (২০রান) ও বিজয় (৩২রান) ফিরে গেলে ইনিংসের বাকি অংশের হাল ধরেন রায়ান বার্ল ও ইয়াসির রাব্বি। এই দুই ব্যাটসম্যানের ঝোড়ো ইনিংসে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে রাজশাহী। রাব্বি ১৪তম ওভারে ১০ বলে ১৯ রানের ইনিংসে খেলে ফিরে গেলেও শেষ দিকে বার্লের ২৭ বলে ৪১ রানের ইনিংসে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রানের সংগ্রহ পায় রাজশাহী।