Dhaka 6:57 pm, Wednesday, 8 May 2024

নোবেল পাওয়ার খবর প্রথমে বিশ্বাস করেননি আবদুলরাজাক

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:51:05 am, Friday, 8 October 2021
  • 3997 Time View

এনবি নিউজ ডেস্ক : ভেবেছিলেন কোনো প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি ফোন করেছেন। তাই, নোবেল পুরস্কার জেতার খবর পেয়ে বিশ্বাস তো করেনইনি, উলটো ফোনের ওপাশে থাকা ব্যক্তিকে ফোন রাখার জন্য রীতিমতো ধমক দিয়েছিলেন—এমনটাই জানালেন এ বছর সাহিত্যে নোবেল পাওয়া তানজানিয়া বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ।

বিবিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় আবদুলরাজাক বলেন, “মধ্যাহ্নভোজের কিছুক্ষণ আগের ঘটনা। আমি নিজের জন্য চা তৈরি করছিলাম। ঠিক সে সময় ফোন বেজে ওঠে। ভেবেছিলাম কোনো বিক্রয় প্রতিনিধি হবে নিশ্চয়ই। ফোন ধরলাম। ওপাশ থেকে এক ব্যক্তি বললেন, ‘হ্যালো, আপনি সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন।’ আমি বললাম, ‘দূর হও তো! আমাকে একা থাকতে দাও।’

‘তবে, তিনি (ফোন করা ব্যক্তি) আমাকে একপর্যায়ে বোঝাতে সক্ষম হন’”, যোগ করেন আবদুলরাজাক।

 

কী লিখে নোবেল পেলেন আবদুলরাজাক

এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তানজানীয় ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ। জানজিবারে জন্মের পর কিশোর বয়সে ইংল্যান্ডে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া গুরনাহ, তাঁর প্যারাডাইসসহ দশটি উপন্যাসে, ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা, আর শরণার্থীদের কষ্টের গল্প তুলে ধরেছেন।

চিকিৎসা, পদার্থ, রসায়নের পর গতকাল বৃহস্পতিবার নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি।

সাহিত্যে নোবেলজয়ী ১১৮তম লেখক হিসেবে আবদুলরাজাক গুরনাহর নাম ঘোষণা করা হয়।

আবদুলরাজাক গুরনাহ তাঁর দরদি ভাষার দ্ব্যর্থহীন লেখায় ফুটে উঠেছে ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা, আর শরণার্থীদের কষ্টের গল্প।

সুইডিশ একাডেমির স্থায়ী সচিব ম্যাটস মালম বলেন, ‘জানজিবারে জন্ম নেওয়া আবদুলরাজাক গুরনাহকে ২০২১-এর নোবেল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তিনি জানজিবারে জন্ম নিলেও কর্মজীবন ইংল্যান্ডে কাটিয়েছেন। গুরনাহের আপোষহীন ও দরদী লেখায় ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা আর শরণার্থীদের জীবনের নানা কষ্ট-ব্যাঞ্জনার গল্প ফুটে উঠেছে।’

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার পাবেন গুরনাহ।

১৯৪৮ সালে আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার জানজিবার দ্বীপে জন্ম নেওয়া আবদুল রাজ্জাক গুরনাহ ১৯৬০ সালে শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। অবসরের আগপর্যন্ত কেন্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্য এবং পোস্ট কলোনিয়াল স্টাডিজের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন আফ্রিকা বংশোদ্ভূত কৃষ্ণাঙ্গ ঔপন্যাসিক গুরনাহ।

৭৩ বছর বয়সী গুরনাহ ১০টি উপন্যাস লিখেছেন। এর মধ্যে ‘প্যারাডাইস’ অন্যতম। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত এ উপন্যাসে ২০ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তানজানিয়ায় এক কিশোরীর বেড়ে ওঠার গল্প বর্ণনা করা হয়েছে নিপুণভাবে। পরে এটি সাহিত্যের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ‘বুকার’ পুরস্কার জেতে। সেই উপন্যাস প্যারাডাইসের জন্যই এবার গুরনাহকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

অন্য উপন্যাসেও পূর্ব আফ্রিকার সমাজে ভালোবাসা ও দুঃখের চিত্রের পাশাপাশি শরণার্থীদের জীবন তুলে ধরেছেন গুরনাহ।

আজ শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

নোবেল পাওয়ার খবর প্রথমে বিশ্বাস করেননি আবদুলরাজাক

Update Time : 04:51:05 am, Friday, 8 October 2021

এনবি নিউজ ডেস্ক : ভেবেছিলেন কোনো প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি ফোন করেছেন। তাই, নোবেল পুরস্কার জেতার খবর পেয়ে বিশ্বাস তো করেনইনি, উলটো ফোনের ওপাশে থাকা ব্যক্তিকে ফোন রাখার জন্য রীতিমতো ধমক দিয়েছিলেন—এমনটাই জানালেন এ বছর সাহিত্যে নোবেল পাওয়া তানজানিয়া বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ।

বিবিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় আবদুলরাজাক বলেন, “মধ্যাহ্নভোজের কিছুক্ষণ আগের ঘটনা। আমি নিজের জন্য চা তৈরি করছিলাম। ঠিক সে সময় ফোন বেজে ওঠে। ভেবেছিলাম কোনো বিক্রয় প্রতিনিধি হবে নিশ্চয়ই। ফোন ধরলাম। ওপাশ থেকে এক ব্যক্তি বললেন, ‘হ্যালো, আপনি সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন।’ আমি বললাম, ‘দূর হও তো! আমাকে একা থাকতে দাও।’

‘তবে, তিনি (ফোন করা ব্যক্তি) আমাকে একপর্যায়ে বোঝাতে সক্ষম হন’”, যোগ করেন আবদুলরাজাক।

 

কী লিখে নোবেল পেলেন আবদুলরাজাক

এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তানজানীয় ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ। জানজিবারে জন্মের পর কিশোর বয়সে ইংল্যান্ডে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া গুরনাহ, তাঁর প্যারাডাইসসহ দশটি উপন্যাসে, ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা, আর শরণার্থীদের কষ্টের গল্প তুলে ধরেছেন।

চিকিৎসা, পদার্থ, রসায়নের পর গতকাল বৃহস্পতিবার নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি।

সাহিত্যে নোবেলজয়ী ১১৮তম লেখক হিসেবে আবদুলরাজাক গুরনাহর নাম ঘোষণা করা হয়।

আবদুলরাজাক গুরনাহ তাঁর দরদি ভাষার দ্ব্যর্থহীন লেখায় ফুটে উঠেছে ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা, আর শরণার্থীদের কষ্টের গল্প।

সুইডিশ একাডেমির স্থায়ী সচিব ম্যাটস মালম বলেন, ‘জানজিবারে জন্ম নেওয়া আবদুলরাজাক গুরনাহকে ২০২১-এর নোবেল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তিনি জানজিবারে জন্ম নিলেও কর্মজীবন ইংল্যান্ডে কাটিয়েছেন। গুরনাহের আপোষহীন ও দরদী লেখায় ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা আর শরণার্থীদের জীবনের নানা কষ্ট-ব্যাঞ্জনার গল্প ফুটে উঠেছে।’

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার পাবেন গুরনাহ।

১৯৪৮ সালে আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার জানজিবার দ্বীপে জন্ম নেওয়া আবদুল রাজ্জাক গুরনাহ ১৯৬০ সালে শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। অবসরের আগপর্যন্ত কেন্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্য এবং পোস্ট কলোনিয়াল স্টাডিজের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন আফ্রিকা বংশোদ্ভূত কৃষ্ণাঙ্গ ঔপন্যাসিক গুরনাহ।

৭৩ বছর বয়সী গুরনাহ ১০টি উপন্যাস লিখেছেন। এর মধ্যে ‘প্যারাডাইস’ অন্যতম। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত এ উপন্যাসে ২০ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তানজানিয়ায় এক কিশোরীর বেড়ে ওঠার গল্প বর্ণনা করা হয়েছে নিপুণভাবে। পরে এটি সাহিত্যের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ‘বুকার’ পুরস্কার জেতে। সেই উপন্যাস প্যারাডাইসের জন্যই এবার গুরনাহকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

অন্য উপন্যাসেও পূর্ব আফ্রিকার সমাজে ভালোবাসা ও দুঃখের চিত্রের পাশাপাশি শরণার্থীদের জীবন তুলে ধরেছেন গুরনাহ।

আজ শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।